প্রিন্ট এর তারিখঃ Nov 4, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Oct 16, 2025 ইং
সখীপুরে মায়ের মৃত্যুশোক নিয়ে পরীক্ষা দেওয়া ২ ছাত্রী পাস করেছেন
    
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার দুই প্রান্তে দুই খাটিয়ার পাশে নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে কাঁদছিল দুই শিক্ষার্থী। চারপাশে স্বজনেরাও কান্না করছিল, কারও চোখে জল, কারও কাঁপছে ঠোঁট। স্বজনদের আহাজারি ও মায়েদের লাশ বাড়িতে রেখেই পরীক্ষা কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলেন হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী সায়মা আক্তার এবং সানস্টার ইনস্টিটিউট অব টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের শিক্ষার্থী লাবণী আক্তার। আজ বৃহস্পতিবার এইচএসসি পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে তাঁরা দুজনেই পাস করেছেন। সায়মা পেয়েছেন জিপিএ-৩.৭৫ ও লাবণী পেয়েছেন জিপিএ-৪.৫৪। দেশব্যাপী ফল বিপর্যয়ের মধ্যেও এই দুই শিক্ষার্থীর সাফল্যে সংশ্লিষ্ট কলেজ, পরীক্ষা কেন্দ্র, শিক্ষক, পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে। 
ওই দুই শিক্ষার্থীর কলেজ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হতেয়া গ্রামের রায়হান খানের মেয়ে সায়মা আক্তার হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। গত ৩ জুলাই বৃহস্পতিবার সখীপুর সরকারি কলেজ কেন্দ্রে তাঁর ইংরেজি ২য় পত্রের পরীক্ষা ছিল। এর আগের দিন বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে তাঁর মা শিল্পী আক্তার (৪০) কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতেই মারা যান। অপরদিকে উপজেলার কচুয়া পশ্চিমপাড়া এলাকার আব্দুল মান্নানের মেয়ে লাবণী আক্তার সানস্টার ইনস্টিটিউট অব টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের শিক্ষার্থী। একইদিন (৩ জুলাই) সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজ কেন্দ্রে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় বিজনেস ইংলিশ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিষয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। কিন্তু আগেরদিন বুধবার রাত ৯টার দিকে তাঁর মা সফিরন নেছা (৪৫) মারা যান। পরীক্ষার দিন উভয় বাড়িতেই লাশ দাফনের প্রস্তুতি চলছিল। মায়ের মৃত্যুর পর সায়মা আক্তার ও লাবণী আক্তার ভেঙে পড়লেও স্বজনদের কথায় তাঁরা এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। লাবণীর মায়ের জানাজা সকাল সাড়ে ১১টায় অন্যদিকে সায়মার মায়ের জানাজা বাদ জোহর অনুষ্ঠিত হয়। আজ ফলাফল প্রকাশের পর হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রহিজ উদ্দিন ও সানস্টার ইনস্টিটিউট অব টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ নাসির উদ্দিন আহমেদ প্রগতির আলোকে বলেন, মায়ের লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দেওয়া অত্যন্ত কষ্টদায়ক ছিল। পরীক্ষার সময়ও মেয়ে দুটির চোখ বেয়ে পানি ঝরতে দেখা গেছে। তারপরও এই দুই শিক্ষার্থী পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেছে। আল্লাহ যেনো তাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সফলতা দেন।
 
    
       © সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃdailyprogotiralo.com