প্রিন্ট এর তারিখঃ Sep 12, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Aug 29, 2025 ইং
লতিফ সিদ্দিকীসহ সকলের সসম্মানে মুক্তি চাইলেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম

কৃষক শ্রমিক জনতালীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীসহ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির অনুষ্ঠানস্থল থেকে আটককৃতদের মুক্তি চেয়েছেন। তিনি বৃহস্পতিবার বিকেলে টাঙ্গাইলে তার নিজ বাসভবন সোনারবাংলায় এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি এই দাবি জানান।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, মঞ্চ ৭১ নামে এক সংগঠনের ব্যানারে রিপোর্টার্স ইউনিটিতে একটি আলোচনা সভায় আমাদের নেতা বড়ভাই লতিফ সিদ্দিকী গিয়েছিলেন। ড. কামাল হোসেন প্রধান অতিথি ছিলেন। জেড আই খান পান্নাও ছিলেন। এ সময় শতের নিচে কিছু লোক মব দিয়ে অনুষ্ঠান বাঞ্চাল করে দিয়েছে। এটার কোন গণতান্ত্রিক দেশে কারো সভা সমাবেশ বাঞ্চাল করার সাংবিধানিক বা আইনানুগ কোন সুযোগ নেই। তাদের এখানো ডিবি অফিসে রাখা হয়েছে। তারা জানেন লতিফ ভাই অনেক ভালো মানুষ। লতিফ সিদ্দিকীর জন্ম না হলে টাঙ্গাইলের রাজনীতিতে অনেক কিছুই হতোনা। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতোনা। তেমনি লতিফ সিদ্দিকর জন্ম না হলে আমরা রাজনীতিতে আসতামনা। আমার মতো ভীরু কাপুরুষ দুচারটা পাওয়া যেতনা। ওই সভায় অংশ নেওয়া কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে রাখা হয়েছে। আদৌ গ্রেপ্তার করা হয়েছে কিনা জানিনা। আমি তাদের স্বসম্মানে মুক্তি চাই। ভবিষ্যতে আর যাতে এমন কোন ঘটনা না ঘটে সে জন্যও অধ্যাপক ইউনুসের কাছে আহবান জানাই।
তিনি আরও বলেন, আমি আপনাদের মাধ্যমে সারাদেশবাসীকে এবং আন্তর্জাতিক দুনিয়াকেও জানাতে চাই, চব্বিশের আগস্টের বৈষম্যবিরোধী বিজয়কে আমি স্বাধীনতার কাছাকাছি মনে করি। সেই বিজয়ের সফলতা আমি সবসময় কামনা করি। কিন্ত সেই বিজয়ী বীরেদের কার্যকলাপে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। আমিতো ভেবেছিলাম তাদের এই বিজয় হাজার বছর চিরস্থায়ী হবে। কিন্তু এক বছরেই তাদের এই বিজয় ধ্বংসের দিকে চলে যাবে এটা আমি কখনো আসা করিনাই। এটা যদি বলা হয় তাহলে আওয়ামী স্বৈরাচারের চাইতে আওয়ামী দোসরদের চাইতে এই স্বৈরাচারতো অনেক বড় স্বৈরাচার। মানুষকে কথা বলতে দিচ্ছেনা। মত প্রকাশ করতে দিচ্ছেনা।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে সবচাইতে বড় সমস্যা সুন্দরভাবে নিরপেক্ষভাবে একটি ভোট অনুষ্ঠান। ভোটাররা যাতে নিরাপদে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে। সেই জন্যে নির্বাচনের মস্তবড় সংস্কার দরকার। নিরাপত্তা দরাকার। অন্যকিছু অনির্বাচিত সরকার দ্বারা সংস্কার উচিৎনা। মানুষ মেনে নেবেনা। যার ফলে আজ মঞ্চ ৭১ অনুষ্ঠানে যারা অতিথি ছিলেন শ্রোতা ছিলেন কমবেশি উভয়কেই পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। তাদেরকে স্বসম্মানে ছেড়ে দেওয়া হউক। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে সেজন্য অধ্যাপক ইউনুসের কাছে আমি আহবান জানাবো।
তিনি বলেন, আটককৃতদের যে কোন মামলায় গ্রেপ্তার দেখালে আমাদের আপত্তি নেই। সত্য হউক মিথ্যা হউক মামলা দিন। মামলা ছাড়া কাউকে একমিনিটের জন্য অসম্মানিত করা ঠিকনা। আমি জানলাম তার নামে মামলা দেওয়া হবে। মামলা নিয়ে আমাদের কোন আপত্তি নেই। লতিফ সিদ্দিকী পাকিস্তান আমলে ৪০ বার জেলে গেছেন। বাংলাদেশেও কয়েকবার জেলে গেছেন। সরকার আইনানুগভাবে চললে আমরা আইন দিয়েই মোকাবেলা করবো।
তিনি বলেন, এমন অবস্থার বিরুদ্ধে মানুষ হিসেবে সারা দেশের জেগে উঠা উচিৎ। আন্দোলন করা উচিৎ। সক্রিয় হওয়া উচিৎ। ঘুমিয়ে থাকলে আমাদের সম্মান থাকবেনা। ইজ্জত থাকবেনা। আমি প্রথমত কাদেরিয়া বাহিনীকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করছি। এরপর সারাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের তাদের আওয়ামীলীগের মুক্তিযোদ্ধা, বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা, জাতীয় পার্টির মুক্তিযোদ্ধা অথবা অন্য কারো মুক্তিযোদ্ধা না ভেবে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দেখা উচিৎ। তাদের এই চেতনা থাকা উচিৎ। আমি তাদেরকে ঐকবদ্ধ করার জন্য অবশ্যই চেষ্টা করবো।
তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ভোটাররা যেখানে ভোট দিতে পারবে। আমি সেই ভোটে অংশ গ্রহণ করবো। যেখানে ভোটারা ভোট দিতে পারবেনা আমি সেখানে নির্বাচন যাবোনা। আজকে যারা ২৪ আন্দোলন নিয়ে গর্ব করেন। আমরা ২৫ বছর কষ্ট করেছি। আন্দোলন করেছি। আওয়ামীলীগের শেখ হাসিনার অব্যবস্থা, ২৫ বছর শেখ হাসিনার কাজ কর্ম আমরা যে সমালোচনা করেছি, বিগত চার বছরে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নেতারা একা তা করতে পারেনি। তাই রাজনীতিকে বাদ দিতে এইভাবে দেশে মব সৃষ্টি করা দেশে অরাজক অবস্থা সৃষ্টি করা, আইন শৃঙ্খলা অবনতি করা এটা দেশের প্রথম ঘটনা। যদি তারা এটা চালাতে না পারেন তাহলে সরে যাক। সরে যাওয়া উচিৎ। যদি তারা ক্ষমতায় থাকেন তাহলে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে চলে যান।
তিনি আরও বলেন, ফজলুর রহমানের ছাত্র আন্দোলনে যথেষ্ট অবদান আছে। যুবসমাজকে সচেতন করায় যথেষ্ঠ ভূমিকা আছে। সাহসিকতায় যথেষ্ঠ ভূমিকা আছে। আজকাল যারা কথা বলে তারা বিবেচনা করে কথা বলেনা। কাকে কী বলা যাবে সেই বিবেচনা শক্তি নাই। এটা সামাজিক অবক্ষয়। যদি এথেকে আমরা বেরুতে না পারি তাহলে দেশ জঙ্গলে পরিণত হবে।
দয়া করে দেশটাকে একেবারে ধ্বংস করে দেবেননা। দেশ সকল মানুষের। যখন যে ক্ষমতায় যায় দেশ তারও না, দেশ কারো বাবারও না। তারা দেশের মালিক না। তারা দেশের সেবক। সেবকের মনোভাব নিয়ে অগ্রসর হলে অনেক সমস্যা এমনই এমনি সমাধান হবে।
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃdailyprogotiralo.com