ঢাকা | 12 September 2025

সখীপুরে বেদে পল্লী থেকে হুঁশিয়ারি: গুলি করে মাইরি ফেলেন, জমি ছাড়বো না

Deleted, Deleted
নিউজ প্রকাশের তারিখ :Aug 25, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন: ছবির ক্যাপশন:
ad728

বন বিভাগের জমি থেকে উচ্ছেদের গুঞ্জনে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বেদে পল্লীর বাসিন্দারা।সোমবার দুপুরে কালিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড মৌলভীবাজার উত্তরপাড়ার বেদে পল্লীর বাসিন্দারা হুঁশিয়ারি দেন। তাঁরা বলেন, "চেয়ারম্যান আমাদের ভালোবেসে স্নেহ আদর করে এখানে ঠাঁই দিয়েছেন, আমাদের গুলি কইরে মাইরি ফেলেন, কিন্তু আমরা এই জমি ছাড়বো না।" তবে ইউপি চেয়ারম্যান জামাল মিঞা ওই জমি নিজের বলে দাবি করেছেন। এদিকে আজ সোমবার দুপুরে স্থানীয় রেঞ্জ কর্মকর্তা এমরান আলী বেদে পল্লীর ওই জমি বন বিভাগের বলে নিশ্চিত করেন। 

স্থানীয় বাসিন্দা, বেদে পল্লী ও বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড মৌলভীবাজার উত্তরপাড়া টাঙ্গাইলা চালা এলাকার প্রায় দেড় একর জমি বেদে সম্প্রদায়ের দখলে চলে গেছে। এক সময় এই জমিতে বনের প্লট ছিল। বর্তমানে ওই জমিতে বেদে সম্প্রদায়ের প্রায় ৪০টি পরিবার বসবাস করছে। বনের জমিতেই উঠেছে কয়েকটি রঙিন টিনের ঘর বাড়ি। 
সম্প্রতি স্থানীয় কয়েকজন সংবাদকর্মী বেদে পল্লীর লোকজনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন (ভিডিও সংরক্ষিত)। বেদে পল্লীর বাসিন্দাদের ভাষ্যমতে, কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জামাল মিঞা বেদে সম্প্রদায়ের ওইসব পরিবারের কাছে দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকা শতাংশ দরে জমি বিক্রি করেছেন। কয়েকজনকে জমি বিক্রির সময় কাগজে লিখিতও দিয়েছেন ওই চেয়ারম্যান। 
আগে তাঁদের বাড়ি ছিল ঢাকার সাভার এলাকায়। ১০ থেকে ১২ বছর আগে মাত্র তিনটি পরিবার এখানে আসেন। ধীরে ধীরে সংখ্যাটি বেড়ে বর্তমানে ৪০ থেকে ৫০টি পরিবার বসবাস করছে। চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় তাঁরা সকলেই এ অঞ্চলের ভোটারও হয়েছেন। 

গত কয়েকদিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বয়ান পাল্টিয়েছেন বেদে পল্লীর সদস্যরা। সোমবার রবিউল ইসলামসহ বেদে পল্লীর একাধিক সদস্য সাংবাদিকদের জানান, আমরা অসহায় হওয়ায় চেয়ারম্যান সাহেব (জামাল মিঞা) এখানে অনুগ্রহ করে থাকতে দিয়েছেন। আমরা তাঁকে কোনো টাকা পয়সা দিইনি। আমাদের ভালোবেসে স্নেহ আদর করে এখানে ঠাঁই দিয়েছেন। এখন এ জায়গা থেকে তুলে দিতে চাইলে, আমাদের গুলি কইরে মাইরি ফেলেন, কিন্তু আমরা এই জমি ছাড়বো না। তাঁরা আরও বলেন, ৪০ লাখ রোহিঙ্গার যদি এই দেশে জায়গা হয়, তবে ২০-২৫ ঘর বেদে মানুষ কেনো আমরা এই এলাকায় ঠাই পাবো না? এই কথা বলে তাঁরা "এই জায়গা ছাড়ব না, ছাড়ব না" বলে স্লোগান দিতে থাকেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, বেদে পল্লীর বাসিন্দাদের বর্তমান কথাগুলো চেয়ারম্যানের শেখানো বুলি। 

এ বিষয়ে কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জামাল মিঞা বলেন, মানবিক দিক বিবেচনায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা লোকজনগুলোকে আমার নিজের জায়গায় থাকতে দিয়েছি। আমি তাদের কাছ থেকে কোনো টাকা-পয়সা নিইনি। কিছু দুষ্কৃতিকারী লোক আমাকে হেও প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছে। আমি কোনো সরকারি বনের জায়গা তাদের দেইনি, নিজের জায়গা দিয়েছি। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বহেরাতৈল রেঞ্জ কর্মকর্তা এমরান আলী বলেন, বেদে পল্লীর ওই জমিটুকু বন বিভাগের সংরক্ষিত সামাজিক বনায়নের। ইতিমধ্যে জমি নিয়ে দুইটি উচ্ছেদ মামলাও রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে বনের জমি উদ্ধারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

উপজেলা বনায়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল রনী বলেন, এ বিষয়ে আমার কোনো কিছু জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।




কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ