টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রায় ২৫ বছর পর আদালতের মাধ্যমে টাঙ্গাইলের বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট সংসদ (এসডিএস) গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়া শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা শিশু একাডেমি মিলনায়তনে ৩ শতাধিক গ্রাহকদের মধ্যে সঞ্চয় বইয়ের জমানো টাকা ফেরত দেয়া হয়। টাঙ্গাইল জজ কোর্টের তৃতীয় যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক এসডিএস এর জমি বিক্রি করে এই টাকা ফেরৎ দেওয়া হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইল জজ কোর্টের পিপি সফিকুল ইসলাম রিপন। জানা যায়, নব্বইয়ের দশকের শুরুতে দ্রুত ছড়িয়ে পরে দুর্দান্ত প্রতাপশালী সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট সংসদ-এসডিএস। উচ্চ মুনাফার লোভ দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ আমানত সংগ্রহ করেছিল এসডিএস। তাদের প্রলোভনের কঠিন চক্করে পরে গ্রাম-শহরের মানুষ। গ্রাহকদের কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেলে ২০০০ সাল থেকে এসডিএসের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এর পরে বিপাকে পড়ে গ্রাহকরা। গ্রাহকদের টাকা ফেরতের জন্য মানববন্ধনসহ বিভিন্ন আন্দোলন করা হয়। এছাড়াও গ্রাহকরা পাওনা টাকার জন্য টাঙ্গাইল জজ কোর্টের তৃতীয় যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় আদালত গ্রাকদের টাকা ফেরত দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়। অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সন্তোষ এলাকার চান মিয়া ১৯৯৬ সালে এসডিএস-এ টাকা রেখেছিলেন। ২৯ বছর পর জমানো দুই লাখ ৬০ হাজার টাকা পেয়ে আত্মহারা। চান মিয়া বলেন, আমি এই টাকার আসায় ছাইরা দিছিলাম। আজ এই টাকা পেয়ে অনেক খুশি। তার মতো কালিহাতীর সোনিয়া, রতনগঞ্জের পারুলদের মতো ৩শতাধিক গ্রাহক বৃহস্পতিবার টাকা বুঝে নেন। টাকা হস্তান্তর কার্যক্রম উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) মো. ইয়াসির আরাফাত। অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এসডিএস গ্রাহক কল্যাণ সমিতির সভাপতি আব্দুস সালাম চাকলাদার, এসডিএস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হুদা, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ, পোড়াবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুমন দেওয়ান প্রমূখ। টাঙ্গাইল জজকোর্টের পিপি সফিকুল ইসলাম রিপন বলেন, বিভিন্ন জটিলতার কারণে গ্রাকদের টাকা ফেরত পেতে দেরি হয়েছে। কর্তৃপক্ষের গ্রাহক নির্ধারণ করতে দেরি হয়েছিলো। প্রমাণসহ যাদের সঠিক কাগজপত্র রয়েছে, আদালত তাদের টাকা ফেরত দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। সেই মোতাবেক প্রকৃত আমানতকারীদের টাকা ফেরৎ দেওয়া হচ্ছে। এসডিএসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হুদা বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত গ্রাহকরা বৈধ কাগজপত্র নিয়ে আসবেন ততক্ষণ পর্যন্ত টাকা ফেরত দেয়া হবে। প্রায় ৩ শতাধিক গ্রাহককে সুদ ছাড়াই ১ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। এ ধারা অব্যহত থাতবে।