কেন্দ্রীয় বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেছেন, 'দেশের মানুষ গত ১৭ বছর ভোট দিতে পারেনি। সারা বাংলাদেশের মানুষ আজ ভোট দেয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন। এখানে যারা পিআরএর কথা বলছেন, পিআরএর জন্য কিন্তু দেশের মানুষ রক্ত দেয় নাই। পিআরএর জন্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় নাই। পিআর নিয়ে যারা দাবি করছেন- তাঁরা অনেকেই জানেন না পিআর কী জিনিস? সংসদীয় গণতন্ত্রের সূতিকাগার হচ্ছে ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ডের যে পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসি, যেখানে পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসির প্র্যাকটিস করে, যারা পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসির উদ্ভাবক। তাদের দেশেও এখন পর্যন্ত কিন্তু পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হয় নাই। যে সমস্ত দেশে অস্ট্রেলিয়া বলেন, কানাডা বলেন, ভারত বলেন যারা ডেমোক্রেসি প্র্যাকটিস করে তাদের দেশেও পি আর পদ্ধতিতে নির্বাচন হয় না। পিআরএর নাম নিয়ে একটি ধর্মের সাথে আশ্রয় রাজনৈতিক দল জামায়াত ইসলাম-যারা ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করার জন্য বাংলাদেশে অপপ্রয়াস চালাচ্ছে, নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করছে তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে দিতে হবে।'
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলা সদরের চানপুর এলাকায় রামকৃষ্ণ আশ্রমে দুর্গাপূজার অষ্টমীতে কুমারী পূজা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন রামকৃষ্ণ আশ্রমের সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী।
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, 'জামায়াত ইসলামীসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতির নামে নির্বাচনকে প্রলম্বিত বা বানচাল করার চেষ্টা করছে। তারা দেশের নতুন নতুন ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করছে। ষড়যন্ত্র টা কী, সেটা হচ্ছে- যেন গণতান্ত্রিক পরিবেশ বাংলাদেশে আর না হয়। বাংলাদেশে যেন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা না হয়।'
তিনি আরো বলেন 'হ্যাঁ, পিআরএর দাবি থাকতেই পারে কিন্তু যাদের দাবি আছে তাদের দাবি নির্বাচনে মেনু ফেস্টু (ইশতেহার) দিতে পারেন। যারা বিভিন্ন ঠুনকো বাহানায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে বিভিন্ন রকমের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই- গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছিলাম আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে। এই গণতান্ত্রিক ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা রক্ত দিয়েছি। আপনারা আমরা সবাই সম্মিলিতভাবে পুরো জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে সেই সংগ্রামে আমরা যুক্ত ছিলাম ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। এই ফ্যাসিবাদ বিরোধী যে গণতান্ত্রিক ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে, আসুন আমরা সে গণতান্ত্রিক ঐক্যকে সমুন্নত রাখি, আরও শক্তিশালী করি। আর একটা কথা স্পষ্ট করে বলে দিচ্ছি নির্বাচন নিয়ে আপনারা কোনো ধোঁয়াশা সৃষ্টি করবেন না। আপনাদেরকে আহ্বান জানাবো- বাংলাদেশের মানুষ এখন যেভাবে নির্বাচনমুখী হয়েছে, সারা বাংলাদেশে নির্বাচনী আমেজ চলছে।'
কুমারী পূজা নিয়ে কায়সার কামাল তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘কুমারী পূজা হলো নারীকে মাতৃশক্তির প্রতীক হিসেবে শ্রদ্ধা করা। হিন্দু ধর্মের শাস্ত্রে আছে প্রতিটি নারীর মধ্যেই দেবীশক্তি বিদ্যমান। এই পূজার মাধ্যমে সেই শক্তিকে সম্মান জানানোর জন্য কুমারী পূজা করা হয়। ইদানিন্তকালে স্বামী বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মিশনে প্রথম কুমারী পূজা প্রচলন করেন। এই দুর্গাপূজার মধ্য দিয়ে সবার মধ্যে সম্প্রীতি বিরাজমান হোক। আমাদের এই দেশ অসাম্প্রদায়িক। এখানে সকল ধর্মের মানুষেরই শান্তিতে বসবাস করার অধিকার রয়েছে। প্রত্যেক মানুষই তার নিজ নিজ ধর্ম ও আচার–অনুষ্ঠান পালন করবে, এটাই স্বাভাবিক। আমরা সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ নিয়ে শান্তিতে দেশে বসবাস করতে চাই। সব ধর্মেই মানুষের কল্যাণের কথা বলা হয়েছে।’