ছবির ক্যাপশন:
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ শ্রমিকই এখনো শ্রম আইনের সুরক্ষার বাইরে রয়ে গেছেন। প্রতিনিয়ত তাদের নিরাপত্তা ও অধিকার ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এমনকি তাদের জীবন বাঁচানোর প্রাতিষ্ঠানিক কোনো উদ্যোগও গৃহীত হয়নি। কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে শ্রমিক হতাহত হন, অনেককে পঙ্গুত্ব বরণ করে পরিবারের বোঝা হয়ে বাঁচতে হয়। এতে পরিবারে অশিক্ষা, বাল্যবিবাহ ও শিশুশ্রমের মতো ঘটনা বেড়ে যায়; যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে রাষ্ট্রে, সমাজে, দেশের সার্বিক অর্থনীতিতেও।
শ্রমিকদের সুরক্ষায় সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে ১২টি সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্যনিরাপত্তা এবং রাসায়নিক দ্রব্য ও বিস্ফোরক মজুদসংক্রান্ত রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক আইন, বিধিবিধান প্রয়োগের ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ। শ্রম আইন সংশোধনের যে উদ্যোগ চলমান সেখানে নিরাপত্তা ও আইন লঙ্ঘনের শাস্তির বিধান কঠোর করা। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নীতিমালা ও গাইডলাইন অনুসরণে শ্রম আইন, বিস্ফোরক আইন, বয়লার আইন, পরিবেশ আইন যুগোপযোগী ও হালনাগাদ করা। বিস্ফোরক পরিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে সমন্বিত ও শক্তিশালীপরিদর্শন, মনিটরিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা। সেই সঙ্গে পরিদর্শন ও মনিটরিং কার্যক্রমে ট্রেড ইউনিয়ন ও সিভিল সোসাইটি সংগঠনগুলোকে যুক্ত করা। রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগে ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা, ঘাটতি ও সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত করা এবং সেগুলো দূরীকরণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ। দুর্ঘটনায় আহত-নিহত শ্রমিকসহ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বৃদ্ধি, চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা। প্রতিটি দুর্ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ, প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়ন। দুর্ঘটনায় দায়ীদের দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা। দুর্ঘটনা প্রতিরোধ, কারখানা ও কমিউনিটিভিত্তিক সেফটি কমিটি গঠন। জাতীয় শিল্প স্বাস্থ্য ও সেফটি কাউন্সিলকে সক্রিয় করা; নিরাপত্তা উন্নয়ন বিষয়ে শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ এবং সরকারি গণমাধ্যমসহ বেসরকারি মিডিয়াগুলোকে সম্পৃক্ত করে জনসচেতনতা বাড়াতে প্রচারণা চালানো।
বিলসের নির্বাহী পরিচালক ও শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতানউদ্দিন আহম্মদের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এসআরএসের নির্বাহী পরিচালক সেকেন্দার আলী মিনা। আলোচনায় অংশ নেন অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবীর, শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য অ্যাডভোকেট একেএম নাসিম, কর্মজীবী নারীর অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক সানজিদা সুলতানা, ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিলের সভাপতি কুতুবউদ্দিন আহম্মেদ, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) সাবেক পরিচালক ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ আবুল বাসার মিয়া, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক নইমূল আহসান জুয়েল ও শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সমন্বয়কারী আব্দুল কাদের হাওলাদার।