ঢাকা | 04 November 2025

সরকারের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংকে এস আলমের সালিশি মামলা

প্রগতির আলো ডেস্ক, .
নিউজ প্রকাশের তারিখ :Oct 30, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন: ছবির ক্যাপশন:
ad728

আন্তর্জাতিক সালিশি ব্যবস্থার দ্বারস্থ হয়েছেন ব্যবসায়ী এস আলম ও তাঁর পরিবার। তাদের অভিযোগ, অবৈধভাবে পাচার হওয়ার অভিযোগে যেসব সম্পদ উদ্ধারে বাংলাদেশ সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে, এতে তাদের কোটি কোটি ডলার ক্ষতি হচ্ছে। গত সোমবার বিশ্বব্যাংকের ওয়াশিংটনে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর সেটেলমেন্ট অব ইনভেস্টমেন্ট ডিসপিউটসে (আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ বিরোধ নিষ্পত্তি কেন্দ্র) এই আবেদন জমা দেন। লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস এই খবর দিয়েছে। তবে এস আলমের এ মামলার বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

অভিযোগে এস আলম পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হওয়ার পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী  সরকার  গঠন করা হয়। তাদের পরিবারকে লক্ষ্য করে বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে এই সরকার। এর মধ্যে অযৌক্তিকভাবে সম্পদ জব্দ ও বাজেয়াপ্ত করা এবং সম্পদ ধ্বংস করার মতো পদক্ষেপ রয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকার দাবি করেছে, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে দেশ থেকে কয়েকশ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার এই অর্থ ফেরত আনার চেষ্টা করছে। অন্তর্বর্তী সরকার যে শ্বেতপত্র কমিটি গঠন করেছিল, সেই কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনার শাসনামলে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন (২৩ হাজার ৪০০ কোটি) ডলার পাচার হয়েছে। পাচার হওয়া টাকা উদ্ধার প্রচেষ্টার নেতৃত্বে আছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এস আলম গ্রুপ যথারীতি এসব অস্বীকার করে বলেছে, আহসান মনসুরের এসব অভিযোগের ভিত্তি নেই। গত বছরের ডিসেম্বরে এস আলম পরিবারের আইনজীবীরা ইউনূস সরকারকে জানিয়েছিলেন, ছয় মাসের মধ্যে বিরোধ মীমাংসা না হলে সালিশি মামলা করা হবে।

বিশ্বব্যাংকে করা এস আলমের সালিশি মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, সরকার তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দের পাশাপাশি সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেছে। সেই সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে ‘ভিত্তিহীন’ তদন্ত করেছে। শুধু তাই নয়, এস আলম পরিবারের বিরুদ্ধে ‘প্ররোচনামূলক মিডিয়া অভিযান’ চালানো হয়েছে। এসব কারণে এস আলম পরিবারের শতকোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে, যদিও তারা ক্ষতিপূরণের সঠিক হিসাব দেননি। সরকার তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে আহসান এইচ মনসুর বলেছিলেন, যেসব ধনী ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ আছে, তাদের সঙ্গে আর্থিক সমঝোতা করা হতে পারে।

২০০৪ সালে বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ চুক্তির আওতায় এই সালিশি মামলা করা হয়েছে। বলা দরকার, এস আলম পরিবার বর্তমানে সিঙ্গাপুরে বসবাস করছে। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের হাতে আসা নথি অনুযায়ী, এই পরিবার ২০২০ সালে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করার পর ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব গ্রহণ করে।

এস আলম পরিবার আগে বলেছে, সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে তাদের কিছু সুরক্ষা প্রাপ্য। বাংলাদেশে যে ১৯৮০ সালের বিদেশি ব্যক্তিগত বিনিয়োগ আইন আছে, সেই আইন অনুযায়ী তাদের সুরক্ষা পাওয়া উচিত।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় এ বিষয়ে মন্তব্যের আবেদনে সাড়া দেয়নি। এই সালিশি মামলার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, যখনই আবেদন তাদের হাতে আসবে, তখনই তারা যথাযথভাবে উত্তর দেবেন।



কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ