ঢাকা | 03 November 2025

টাঙ্গাইলে ১২৪৪ মণ্ডপে দুর্গোৎসবের আয়োজন রঙ-তুলির আঁচরে সজ্জিত হচ্ছে প্রতীমা

স্টাফ রিপোর্টার, .
নিউজ প্রকাশের তারিখ :Sep 20, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন: ছবির ক্যাপশন:
ad728



দরজায় কড়া নাড়ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজা। উৎসবকে ঘিরে টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলায় এক হাজার ২৪৪টি মণ্ডপের প্রতীমায় চলছে সাজ-সজ্জা আর রঙ-তুলির কাজ। শিল্পীদের নিঁপুন হাতের ছোঁয়ায় অপরূপ সৌন্দর্য্যমণ্ডিত হচ্ছে মাটির প্রতিমা। দুর্গোৎসবকে পরিপূর্ণ করতে মণ্ডপে মণ্ডপে দিনরাত চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। 

বিকাশ চন্দ্র ঘোষ জানান, পঞ্জিকা অনুযায়ী ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবী পক্ষের সূচনা হবে। ২৭ সেপ্টেম্বর দেবীর বোধন ও মহাপঞ্চমী এবং ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। ২৯ সেপ্টেম্বর মহাসপ্তমী এবং ৩০ সেপ্টেম্বর মহাঅষ্টমী অনুষ্ঠিত হবে। ১ অক্টোবর মহানবমী এবং ২ অক্টোবর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শারদীয় দূর্গোৎসবের পরিসমাপ্তি ঘটবে। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, এ বছর দুর্গাদেবী গজে বা হাতির পিঠে চড়ে মর্ত্যে আগমন করবেন। আর দোলা বা পালকিতে চড়ে কৈলাশে ফিরে যাবেন। 

টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলায় ৫৬টি, ধনবাড়ীতে ৩৫টি, ঘাটাইলে ৭০টি, কালিহাতীতে ১৬৩টি, গোপালপুরে ৫৫টি, ভূঞাপুরে ৩৭টি, টাঙ্গাইল সদরে ২১৪টি, নাগরপুরে ১২৯টি, দেলদুয়ারে ১২৩টি, মির্জাপুরে ২৫৭টি, বাসাইলে ৭০টি এবং সখীপুর উপজেলায় ৩৫টিসহ মোট এক হাজার ২৪৭টি পূজা মন্ডপে শারদীয়  দুর্গাউৎসব অনুষ্ঠিত হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, জেলা শহরের শ্রী শ্রী কালিবাড়ী, থানাপাড়া, সাবালিয়া, রেস্ট্রিপাড়া, কলেজপাড়া, প্যারাডাইস পাড়ার পূজা মণ্ডপে প্রতীমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ। এখন চলছে প্রতীমায় রঙ-তুলির আঁচড়ে সৌন্দর্য্য ফুঁটিয়ে তোলার কাজ। ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতীমা তৈরির কারিগর ও শিল্পীরা। দম ফেলার ফুরসত নেই তাদের। ইতোমধ্যে তোরণ নির্মাণ ও আলোকসজ্জার কাজও চলছে সমানতালে। 
মানিক চন্দ চন্দ্র জানায়, যথাসময়ে প্রতীমা তৈরির কাজ শেষ হবে। নির্ধারিত সময়ের আগেই দুর্গা দেবীর আরাধনার জন্য মণ্ডপগুলো প্রস্তুত হবে। এর মধ্যেই দেবী দুর্গার প্রতীমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ। এখন চলছে রঙ-তুলির আঁচড়ে সৌন্দর্য্য ফুঁটিয়ে তোলার কাজ। কারিগররা একেক জনে একাধিক প্রতীমা তৈরি করছেন। 
জেলা পূজা উদযাপন ফ্রণ্টের সভাপতি অমল ব্যানার্জি জানান, শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনের লক্ষ্যে তাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে। আসন্ন দুর্গাপূজা নিয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশের সাথে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। প্রশাসনের পাশাপাশি প্রতিটি পূজা মন্ডপে তাদের নিজস্ব সেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবে। 
তিনি জানান, গত বছরের চেয়ে এ বছর টাঙ্গাইলে পূজা মন্ডপের সংখ্যা বেড়েছে। সরকারে পক্ষ থেকে প্রতিটি মন্ডপের জন্য ৫০০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে এ উৎসবে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। 
জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার সার্বিক নিরাপত্তার প্রয়োজনে জেলার পুজা মন্ডপগুলোতে ৯৫০ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়া আনসার, পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর পাশাপাশি মোবাইল টিম ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করবে। 
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হক জানান, টাঙ্গাইলে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুর্গোৎসব উদযাপনের সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রস্তুতি সভায় উঠে আসা সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রতিটি মণ্ডপে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপিত হবে বলে তিনি আশাপ্রকাশ করেন।



কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ