টাঙ্গাইলের সখীপুরে জামায়াত ইসলামীর সভাপতি পরিচয় দিয়ে আব্দুল বাছেদ ওরফে বাছেদ মুন্সির অপকর্মে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী উপজেলার দেবরাজ বাজারে তাঁর শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। অন্যদিকে ওই ব্যক্তি জামায়াতের পদবী ব্যবহার করায় বিব্রত পরিস্থিতিতে পড়েছে স্থানীয় জামায়াত ইসলামী। জামায়াতের নেতারা বলছেন- তিনি জামায়াতের কোনো কর্মী বা জনশক্তি নন। বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর সখীপুর উপজেলা শাখার সেক্রেটারি মনিরুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ আগস্ট উপজেলার বড়চওনা ইউনিয়নের দেবরাজ এলাকার বাসিন্দা আব্দুল বাছেদ মুন্সি (৫৫) এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে গাজীপুরে তাঁর এক আত্মীয়ের বাসায় ওঠেন। সেখানে তাঁদের বনিবনা না হওয়ায় ধারালো কিছু দিয়ে বাছেদ মুন্সির পুরুষাঙ্গ কেটে দিয়ে প্রবাসীর স্ত্রী পালিয়ে যান। পরে আহত বাছেদ মুন্সি ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে এলাকায় ফিরেন।
সম্প্রতি এ ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা দাবি করেন, বাছেদ মুন্সী এলাকায় নিজেকে জামায়াত ইসলামীর বড়চওনা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি পরিচয় দিতেন। আজ শুক্রবার দেবরাজ বাজারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনের ব্যানারেও বাছেদ মুন্সিকে জামায়াতের ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি লেখা হয়েছে।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া স্থানীয় বাসিন্দা আবু বকর সিদ্দিক, শহিদুল ইসলাম, তোফাজ্জল, মো. সুলতান ও কাশেম আলী দাবি করেন, বাছেদ মুন্সি একজনকে ধর্ষণ করেছে, আমরা তাঁর বিচার চাই। তাঁরা আরও জানান, বাছেদ মুন্সি এলাকায় জামায়াতের সভাপতি পরিচয় দিতেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর সখীপুর উপজেলা শাখার সেক্রেটারি মনিরুজ্জামান বলেন, মূলত বাছেদ মুন্সি আমাদের সংগঠনের কোনো জনশক্তি নন। আমাদের কর্মী বা কোনো দায়িত্বপ্রাপ্তও নন। আমি প্রথম ওনাকে ফেসবুকে দেখলাম। সংগঠনের পরিচয়তো অনেকেই দেয়, তবে তা আমাদের জানার বাইরে। এখন নিজে নিজেই কেউ যদি পরিচয় দেন সেখানে আমাদের করার কিছু নেই। জামায়াতের পরিচয় দিয়ে থাকলে তা মিথ্যা ও বানোয়াট। আমরা এলাকাবাসীকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম ভূঞা বলেন, পুরুষাঙ্গ কর্তনের বিষয়ে অভিযোগ দিতে বাছেদ মুন্সি থানায় এসেছিলেন। যেহেতু ঘটনাস্থল গাজীপুরে, তাই তাঁকে সংশ্লিষ্ট থানায় গিয়ে অভিযোগ দিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার রাত পৌনে ৮টায় মোবাইল ফোনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল বাছেদ বলেন, আমি মূলত জামায়াত ইসলামী সমর্থন করি। তাদের সঙ্গে কয়েকদিন কাজও করেছি। কিন্তু লিখিতভাবে আমাকে কোন পদ-পদবী দেওয়া হয়নি। ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, আমার সঙ্গে ওই মহিলার সম্পর্ক ছিল এটি সত্য। তাঁর ইচ্ছাতেই আমরা গাজীপুরে গিয়েছিলাম। সেখানে ধর্মীয়ভাবে বিয়েও পড়ানো হয়েছে। কিন্তু কি কারণে সে এমন করল বুঝতেছিনা।