টাঙ্গাইলের সখীপুরে ছিনতাইকারীদের হামলায় অটোরিকশা চালক আবু হানিফের (৪৫) মৃত্যুর ঘটনার নতুন করে তদন্ত শুরু হয়েছে। আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের খানপাড়া এলাকার বাসিন্দা আবু হানিফের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় ময়নাতদন্তের জন্য দাফনের ৫ মাস পর লাশটি উত্তোলন করা হলো। 
এর আগে গত ৫ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে যাত্রী বেশে তিন ব্যক্তি হানিফকে কুপিয়ে তাঁর অটোরিকশাটি নিয়ে যায়। পরেরদিন (৬ এপ্রিল) উপজেলার নলুয়া-কালমেঘা সড়কের কানু মার্কেট এলাকা থেকে অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার ১৬ দিন পর ২২ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হানিফের মৃত্যু হয়। ওই সময় পরিবারের অনুরোধে ময়নাতদন্ত ছাড়াই পুলিশ লাশটি দাফনের অনুমতি দেয়। কিন্তু দাফনের সপ্তাহ খানেক পর আবু হানিফের স্ত্রী লাভলী আক্তার বাদী হয়ে টাঙ্গাইল আদালতে মামলা করেন। মামলায় পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এছাক আলীর ছেলে আব্দুল মান্নানের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়েছে। 
মামলার বাদী লাভলী আক্তার বলেন, আমার স্বামী আব্দুল মান্নানের হয়ে রাজমিস্ত্রির কাজ করত। শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় একটি প্রকল্পের কাজ শেষ করতে দেরি হচ্ছিল। এ কারণে আব্দুল মান্নান আমার স্বামীকে প্রতিনিয়ত মোবাইল ফোনে হুমকি-ধামকি ও গালিগালাজ করত। আমার ধারণা সেই আমার স্বামীর সঙ্গে এমন করেছে। 
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, আবু হানিফ পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী ছিলেন। সংসারের অভাব দূর করতে রাতের বেলায় অটোরিকশা চালাতেন। গত ৫ এপ্রিল শনিবার রাত ১০টার দিকে সখীপুর পৌর শহর থেকে নলুয়া বাজারে যাওয়ার কথা বলে তিন ব্যক্তি আবু হানিফের অটোরিকশাটি ভাড়া করেন। পথে বোয়ালী বাজার পার হলে একটি পিকআপ হানিফের অটোরিকশার গতিরোধ করে। এ সময় অটোরিকশায় থাকা যাত্রী বেশে ছিনতাইকারীদের একজন আবু হানিফের মাথায় চাপাতি দিয়ে কোপ দেয়। ছিনতাইকারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে হানিফকে পিকআপে তুলে ৩ কিলোমিটার দূরে দেওদীঘি বাজারের কাছে ফেলে রেখে যায়। এদিকে ছিনতাইকারীদের একজন অটোরিকশাটি নিয়ে পালিয়ে যায়। রাত ১১টার দিকে স্থানীয়রা অটোচালক হানিফকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে তাঁকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ঘটনার ১৬ দিন পর ২২ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হানিফের মৃত্যু হয়।।
বৃহস্পতিবার কবর থেকে লাশ উদ্ধারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুন্নাহার শিলা, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সুমন, সখীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোশারফ হোসেন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। 
সখীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোশারফ হোসেন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, একটি ঘটনায় পাঁচ মাস আগে মৃত্যু হয়। ওই সময় পরিবারের অনুরোধে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশটি দাফন করা হয়েছিল। এখন ওই ঘটনায় মামলা হওয়ায় আদালতের নির্দেশে কবর থেকে লাশটি উত্তোলন করা হচ্ছে।